Krishi Sinchayee Yojana: আবেদন করুন প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনায় এবং পেয়ে যান সেচের খরচের ১০০ শতাংশ ভর্তুকি
পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদের জন্য রয়েছে দারুণ এক সুখবর। ভারতের কেন্দ্র সরকারের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্যোগে সাধারণ মানুষের সাহায্যের জন্য বিভিন্ন ধরনের জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করা হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রকল্পগুলি নারী, শিশু থেকে শুরু করে কৃষক পর্যন্ত সকল সাধারণ মানুষের কল্যানার্থে চালু করা হয়েছে। কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সহায়তার জন্য যে নানাধরনের উল্লেখযোগ্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করা হয়েছে সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরো একটি নাম, সেটি হলো প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার মাধ্যমে কৃষকদের উন্নত জলসেচের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হবে। আর আজ আমরা আলোচনা করতে চলেছি, এই যোজনায় কি কি সুবিধা পাবেন আপনারা, আবেদনের ক্ষেত্রে কি কি শর্ত রয়েছে, আবেদনের জন্য নথিগুলো কি কি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যাদি (Krishi Sinchayee Yojana)।
• চলুন তবে প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক:-
বিভিন্ন ফসলের যথেষ্ট ফলন পাবার ক্ষেত্রে জলসেচ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। উন্নত প্রযুক্তির সাহায্যে একাধারে, যেমন:- বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সঠিক পরিমাণের জল প্রদান করা যায় তেমনভাবেই অতিরিক্ত জল খরচ না করে জল সঞ্চয়ও করা যায়। এতে যেমন কৃষকের খরচ বাচানো সম্ভব হয়, তেমনি যথেষ্ট পরিমাণ ফলনও পাওয়া যায়। এ সমস্ত দিকগুলিকে নজরে রেখে কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা কার্যকরী করা হয়েছে। এই যোজনার মারফত উন্নত কৃষি সেচের যন্ত্র এবং উপকরণ সহ জমিতে অনুসেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য কৃষকদের অনুদান প্রদান করা হয়। এছাড়াও কৃষকরা যদি টাকার বদলে দ্রব্য সামগ্রীরূপে এই অনুদান গ্রহণ করতে চান তবে এই অনুদান PMKSY পোর্টালে রেজিস্টার্ড বিভিন্ন কোম্পানির তরফে দেওয়া হয়ে থাকে।
এই ব্যবসা ভালোমতো শুরু করলে মাসে সহজেই ১ লক্ষের বেশি ইনকাম করতে পারবেন
প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ পার ড্রপ মোর ক্রপ প্রকল্পের অধীনে কৃষকদের কৃষকদের উন্নত প্রযুক্তির সেচ ব্যবস্থার প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং যন্ত্রের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের মূলত স্প্রিংকলার পাইপ এবং ড্রপ সেচ পদ্ধতিতে কৃষিক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় জল দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করা হয়ে থাকে এবং এর পাশাপাশি এই পদ্ধতিতে জলসেচের মাধ্যমে ফসলের ফলন বৃদ্ধির দিকে সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়ে থাকে। উন্নত সেচ প্রযুক্তির সাহায্যে জলের অপচয় ৪০-৪৫ শতাংশ কমানো যায় এবং ফসলের ফলন অন্ততপক্ষে ৩০-৪০ শতাংশ বৃদ্ধি করাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এর পাশাপাশি চাষের ক্ষেত্রে সারের ব্যাবহার কমানোর মাধ্যমে চাষের খরচ কমানোও এই প্রকল্পের আরেকটি উদ্দেশ্য।
• প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনায় আবেদনের মূল শর্তগুলি:-
কেন্দ্র সরকারের তরফে যে সকল জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি শুরু করা হয়েছে তার আওতায় অনুদান পাবার ক্ষেত্রে নাগরিকদের বেশ কিছু শর্ত মেনে পূরণ করতে হয়। এই যোজনার ক্ষেত্রেও বেশ কতগুলি শর্ত রয়েছে, যথা:-
১. আবেদনকারী কৃষকের অবশ্যই নিজস্ব জমি থাকতে হবে। লিজ জমির ক্ষেত্রে ন্যূনতম ৭ বছরের লিজ থাকতে হবে।
২. ড্রিপ সেচের ক্ষেত্রে আবেদনের জন্য জমির পরিমাণ ০.৫ একর থেকে ১২.৫ একর হতে হবে এবং স্প্রিংকলার সেচের ক্ষেত্রে ১ একর থেকে ৫ একর জমি থাকতে হবে।
৩. কম জমির অধিকারী কৃষকরা গোষ্ঠী তৈরি করে এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন।
৪. জলসেচের ক্ষেত্রে অবশ্যই কৃষকদের নিজস্ব জলের উৎস থাকতে হবে।
৫. কৃষকদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে, কারণ এই প্রকল্পের টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করা হবে। এছাড়াও কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সাথে অবশ্যই আধার নম্বর লিংক থাকতে হবে।
• প্রধানন্ত্রীর কৃষি সিঞ্চাই যোজনার সুবিধা:-
১. ড্রিপ সেচ ব্যবস্থা:- ড্রিপ সেচ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে একজন কৃষককে কেন্দ্র সরকারের তরফে হেক্টর প্রতি ২১,৬৪৩ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১,১২,২৩৭ টাকা পর্যন্ত অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। এই অনুদানের পরিমাণ ড্রিপ সমান্তরাল স্পেসিং এবং জমির পরিমাণের ওপর নির্ভরশীল। একজন কৃষককে সর্বোচ্চ ৫ হেক্টর জমির জন্য এই অনুদান প্রদান করা হবে। ২ হেক্টর বা তার কম জমির ক্ষেত্রে কৃষকদের সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে, এক্ষেত্রে জিএসটির যে মূল্য থাকে সেটি কৃষককে মেটাতে হয়। অন্যদিকে যে সকল কৃষকদের ২ হেক্টর থেকে ৫ হেক্টর জমি রয়েছে তাদের কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মিলিত উদ্যোগে ৬০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হবে।
কৃষকদের জন্য চালু হলো নতুন যোজনা, আবেদন করলেই পাওয়া যাবে ১৫ লাখ টাকা
২. স্প্রিংকলার সেচ পদ্ধতি:- এই পদ্ধতিতে একজন কৃষককে হেক্টর প্রতি ১৯,৫৪২ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৯৪,০২৮ টাকা পর্যন্ত অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে। এই প্রকল্পের অনুদানের পরিমাণ স্প্রিংকলারের ধরন এবং জমির পরিমাণের ওপর নির্ভরশীল। একজন কৃষককে সর্বাধিক ৫ হেক্টর জমির জন্য এই অনুদান দেওয়া হয়ে থাকে। ২ হেক্টর বা তার কম জমির ক্ষেত্রে কৃষকদের কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মিলিত উদ্যোগে সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হয়ে থাকে। তবে, এক্ষেত্রে জিএসটির যে মূল্য থাকে সেটি কৃষককে মেটাতে হয়। অন্যদিকে যে সকল কৃষকদের ২ হেক্টর থেকে ৫ হেক্টর জমি রয়েছে তাদের কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের মিলিত উদ্যোগে ৬০ শতাংশ ভর্তুকি প্রদান করা হবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে এই দু’টি বিশেষ পদ্ধতি ছাড়াও সেচে সহযোগী যেসকল কাজের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে সেগুলি হলো,
পুকুর খনন:- জলসেচের জন্য প্রয়োজনীয় পুকুর খননের ক্ষেত্রে মোট ব্যয়ের ৭০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া হয়ে থাকে।
সোলার পাম্পসেট:- ২ এইচপি থেকে ১০ এইচপি ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার প্যাম্পসেট বসানোর ক্ষেত্রে একজন কৃষককে সর্বোচ্চ ৭৫ শতাংশ অনুদান প্রদান করা হয়ে থাকে।
• এই যোজনায় আবেদনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় নথি:-
১. আবেদনকারীর আধার কার্ড।
২. আবেদনকারীর ভোটার কার্ড।
৩. ব্যাংক অ্যাকাউন্টের পাশ বইয়ের প্রথম পৃষ্ঠার প্রতিলিপি।
৪. জমির পরচা কিংবা নূন্যতম ৭ বছরের লিজ এগ্রিমেন্টের প্রমাণপত্র।
৫. মোবাইল নম্বর।
৬. ছবি।
৭. জাতিগত শংসাপত্র।
• অফিসিয়াল ওয়েবসাইট:- Link
এইরকম আরও নানান গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে আমাদের পেজটি ফলো করুন এবং নীচের ডানদিকের আইকনে ক্লিক করে আজই যুক্ত হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে।