পুজোর পরেই স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হবে বহু সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে, বড়ো ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর। বিস্তারিত জেনে নিন এখনই
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে সহায়তা করার জন্য এবং স্বনির্ভর হওয়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করা হয়েছিলো। ইতিপূর্বে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিলো যে, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত লোন পেতে পারবেন। এর পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেছিলেন যে, সমগ্র রাজ্যের ৫০,০০০ প্রয়োজনশীল ছাত্রছাত্রীকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রদান করা হবে। আর পুজোর ঠিক আগে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে রীতিমতো বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং। কিন্তু অনেক ছাত্রছাত্রী এখনও পর্যন্ত জানেন না স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা কারা পেতে চলেছেন অথবা মুখ্যমন্ত্রী তার এই নতুন ঘোষণায় স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড সম্পর্কে কি জানানো হয়েছে। আর তাই আজ আমরা সমস্ত শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে আলোচনা করতে চলেছি কারা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাবেন এবং মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ঘোষণা সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য।
• চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক কারা স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পেতে চলেছেন ?
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে,
১. দশম শ্রেণীতে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রী থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর স্তরে পাঠরত ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের প্রয়োজন অনুসারে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের অধীনে ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
২. এছাড়াও যেকোনো প্রফেশনাল কোর্স (যেমন:- ডাক্তারি, ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং যেসকল ছাত্র-ছাত্রীরা IAS, IPS, WBCS এর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা এই ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
শুরু হয়ে গেলো লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের টাকা দেওয়া, আপনার অ্যাকাউন্টে কবে টাকা ঢুকবে জেনে নিন
৩. এর পাশাপাশি যেকোনো চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও ছাত্র-ছাত্রীরা এই ঋণ নেওয়ার যোগ্য।
৪. স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের আওতায় রিং দেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারী ছাত্র অথবা ছাত্রীর বয়স অবশ্যই ৪০ বছরের মধ্যে হতে হবে। প্রসঙ্গত ছাত্রছাত্রীদের ঋণের মেয়াদ থাকবে ১৫ বছর পর্যন্ত।
• স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড নিয়ে নতুন ঘোষণাটি কি ?
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিপূর্বেই জানানো হয়েছিলো যে, রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্যার্থে ৫০ হাজার ছাত্রছাত্রীকে স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের অধীনে লোন দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি এও ঘোষণা করা হয়েছিলো যে, ২০২২ সালের মধ্যেই ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে এই ৫০,০০০ স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড বন্টনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। ইতিমধ্যেই ৩৫ হাজার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের বন্টন সম্পন্ন হয়েছে। যার জেরে বাকি ১৫ হাজার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কবে বিতরণ করা হবে তা নিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ক্রমাগত জল্পনা বেড়ে চলছিলো। আর এরই মধ্যে বিভিন্ন সমীক্ষা অনুসারে জানা গিয়েছে যে, মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগত নভেম্বর মাসের মধ্যেই বাকি ১৫ হাজার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বন্টনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। পুজোর ঠিক পূর্বে মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তে রীতিমতো খুশির জোয়ার ছাত্র-ছাত্রীদের মনে।
কিছুদিন পূর্বেই পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে, এর পাশাপাশি বর্তমানে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে স্নাতক স্তরের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হচ্ছে আর তাতেই ছাত্র-ছাত্রীদের যাতে নতুন কোর্সে ভর্তি এবং পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিংবা উচ্চশিক্ষা লাভের ক্ষেত্রে কোনরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয় তাই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এই ঘোষণা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের বিতরণ এবং স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের অধীনে লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের যাতে কোনোরকম সমস্যার সম্মুখীন না হতে হয়, তার জন্য বিগত শুক্রবার প্রথম সারির ১০ টি ব্যাংকের সাথে বৈঠক ছিলো মুখ্যমন্ত্রীর। আর ওই বৈঠকেই নভেম্বরের মধ্যে বাকি ১৫ হাজার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের বিতরণের সিদ্ধান্তের সম্পর্কে তিনি জানিয়েছেন বলেই জানা গেছে। এর পাশাপাশি এই বৈঠকে যেসকল কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের অধীনস্থ ঋণের টাকা আটকে রয়েছে সেগুলি কিভাবে সমাধান করা যায় তা সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের অধীনে আরও বেশি ঋণ দেওয়া যেতে পারে কিনা তা সম্পর্কেও আলোচনা হয়েছে এই বৈঠকে। যদিও এই বিষয়গুলি সম্পর্কে এখনও কোনো তথ্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে অফিশিয়ালি প্রকাশ করা হয়নি।
এইরকম আরও নানান গুরুত্বপূর্ণ আপডেট পেতে আমাদের পেজটি ফলো করুন এবং নীচের ডানদিকের আইকনে ক্লিক করে আজই যুক্ত হোন আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে।