এক রানীর গল্প
আমরা সবাই কমবেশী সিনেমা দেখি। তা বিনোদনের জন্যই হোক কিংবা কিছু নতুন জিনিস শিখতে বা জানতেই হোক। এবং আমরা যারা সিনেমা ভালোবাসি তারা বাংলা, হিন্দি, ইংরেজী সব ধরনের সিনেমা দেখতে এবং বিশ্লেষণ করতে পছন্দ করি। তো চলুন আজ আলোচনা করা যাক “সোয়েটার” নামক সিনেমাটির ব্যাপারে।
এটি একটি বিখ্যাত বাংলা সিনেমা। যেটি রিলিজ হয়েছিলো ২০১৯ সালের মার্চ মাসে। এই সিনেমাটি বক্স-অফিসেও যথেষ্ট সফল এবং ফিল্ম- সমালোচক দেরও প্রশংসা কুড়িয়েছে। সিনেমাটির পরিচালক ছিলেন শিলাদিত্য মৌলিক এবং এটির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। গোটা সিনেমাটি জুড়ে আমরা “প্রেমে পড়া বারণ” , “আদুরে দিন”-এর মতো একাধিক জনপ্রিয় গান শুনতে পাই।
এই সিনেমাটির সাথে গানগুলির ভূমিকা ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে। সিনেমাটিতে অভিনয় করেছেন জুন মালিয়া, শ্রীলেখা মিত্র, খরাজ মুখার্জির মতো আরও তাবুড়ে অভিনেতা-অভিনেত্রী রা। তবে এই সিনেমার মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছে অভিনেত্রী ইশা সাহা, একজন মধ্যবিত্ত পরিবারের খুব সরল-সাধারন একটি মেয়ের চরিত্রে। সিনেমায় যার নাম হয়েছিলো তুলিকা ওরফে “টুকু”। যার অভিনয় নিঃসন্দেহে দর্শকদের মন কেড়ে নিয়েছে।
মেয়েটির বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন খরাজ মুখার্জি, সিনেমায় যার নাম হয়েছিলো মহাদেব দেবনাথ। আর পাঁচটি মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবার মতো তিনিও তার বড়ো মেয়ে টুকুর বিয়ে নিয়ে খুব চিন্তিত। তার বিয়ের জন্য অনেক সম্বন্ধ আসলেও তার কোনও গুন না থাকার কারণে সব বাতিল হয়ে যায়। যেখানে টুকুর ছোটবোন রান্না-বান্না, নাচ-গানে খুবই গুণী। এই নিয়ে টুকুকে অনেক কথা শুনতে হয়। কিন্তু টুকু খুবই মুখচোরা স্বভাবের হওয়ায় সে সবটা মুখ বুঝে সহ্য করে। হঠাৎই একদিন টুকুর সম্বন্ধ আসে একটি বড়লোক বাড়ি থেকে। এবং টুকুকে দেখতে আসে ছেলের মা যেই চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী জুন মালিয়া। এক্ষেত্রে ছেলের বাড়ির লোকের একটি বক্তব্য মেয়ের আর কোনো গুন না থাকুক তাকে সোয়েটার বুনতে জানতে হবে। কিন্তু কেন এই অদ্ভুত শর্ত তার জন্য অবশ্য আপনাদের সিনেমাটি দেখতে হবে।
এদিকে সম্বন্ধে আশাতেও খুশি নয় টুকু। কারন সে ভালোবাসে পাবলো নামে একটি ছেলেকে, যে একটি ব্যান্ডের সদস্য। পাবলো চরিত্রে অভিনয় করেছে অভিনেতা সৌরভ দাস। টুকু পাবলো কে বিয়ের কথা বলে। কিন্তু পাবলোর বিয়ে, সংসার নিয়ে ধারণাটা ভিন্ন। সে চায় টুকুকে নিয়ে সে দেশ বিদেশে ঘুরে বেড়াবে আর গান শোনাবে। এই নিয়ে টুকুর সাথে পাবলো মতোবিরোধ স্পষ্ট হয়। এদিকে কোনও গুন না থাকার জন্য বাড়ির লোকের টুকুকে খোঁটা দেওয়া বাড়তেই থাকে। এই পরিস্থিতিতে টুকুও সিদ্বান্ত নেয় সে এবার কিছু একটা করে দেখাবে। এরপর সে তার পিসির কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেখানে গিয়ে টুকুর চিন্তা- ধারা এবং জীবনে আমূল পরিবর্তন আসে। এখানে এসে তার সাথে সাম্য নামে এক অসাধারণ ব্যক্তিত্বের একজনের সাথে আলাপ হয়। এইভাবে টুকুর জীবনের sad song কিভাবে happy song হয়ে ওঠে সেটাই সিনেমাটির মূল দ্রষ্টব্য বিষয়। সিনেমাটির সাথে বহু মানুষ নিজের জীবনের মিল খুঁজে পাবেন, আর তাই হয়তো সিনেমাটি এতোটা মন কেড়ে নেয়।
এরাম আরো আপডেট পেতে আজই যুক্ত হন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে- WhatsApp