দীঘা ভ্রমণ মাত্র ১০০০ টাকায়। যাবেন কিকরে? থাকবেন কোথায়? ঘুরবেন কোথায় কোথায়? – Visit Digha at cost 1000 only
ঘুরতে ভালোবাসেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া হয়তো খুব কঠিন। তার ওপর যদি সময়টা শীতকাল হয়। শীতকালে বাঙালি তার ভ্রমণ তেষ্টা মেটাতে পৌঁছে যায় ভারতের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তাই আমরা শুধু করতে চলেছি একটি নতুন প্রচেষ্টা। যেখানে গোটা ভারতবর্ষের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তের সমস্ত ভ্রমণ যোগ্য স্থান নিয়ে আলোচনা করা হবে। সঙ্গে থাকবে হোটেল এবং লোকাল ড্রাইভারের ঠিকানা সমূহ। যার ফলে আপনি খুব সহজে আপনার ভ্রমন দিন গুলি উপভোগ করতে পারবেন।
আজ আমরা যে স্থানটি নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি সেটি হলো দীঘা। সবার প্রথমে দীঘা কেন? একথা আপনার মনে এলে আমরা বলবো সমুদ্র সকলে ভালোবাসে তাছাড়াও একটা কোন থেকে শুরু করলে মাপকাঠিটাও সঠিক থাকে, তবে চলুন শুরু করা যাক।
আমরা আমাদের গন্তব্য শুরুর স্থান ধরে নিচ্ছি কলকাতা। কলকাতা থেকে দীঘা আপনি ট্রেনে কিংবা বাসে যেতে পারেন। বর্তমান সময়ে কলকাতা থেকে বাসের সংখ্যা অন্তত্যই বেশি তাই আপনি যেকোনো স্থান থেকে এসি কিংবা নন এসি বাস ধরে পৌঁছে যেতে পারেন দিঘা, আমি আপনাকে বলবো যদি বাসে যেতে হয় তবে ধর্মতলায় চলে আসুন এখানে সমস্ত ধরনের বাস পেয়ে যাবেন। ভাড়া ১২০ টাকা থেকে শুরু । ট্রেনের ব্যপারে বললে কলকাতা থেকে বর্তমানে দুটি ট্রেন প্রতিদিন যাতায়াত করে। এক তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেস ও তাম্রলিপ্ত সুপারফাস্ট স্পেশাল ভাড়া পড়বে আপানার ১৩০ টাকার কাছাকাছি এছাড়াও আরো দুটি ট্রেন চলে একটি পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস ও আরেকটি পাহাড়িয়া এক্সপ্রেস স্পেশাল যেগুলো শুধুমাত্র শনিবার করে চলে। এই তথ্য গুলো আপনি খুব সহজে পেয়ে যাবেন where is my train কিংবা kolkata bus route app এ। তবে ব্যাগ পত্তর গুছিয়ে উঠে পরুন তাম্রলিপ্ত এক্সপ্রেসে।
ট্রেনটি ছাড়ে সকাল ৬ টা বেজে ৫০ মিনিটে হাওড়া স্টেশন থেকে। বর্তমানে যেহেতু অফলাইনে টিকিটের কোনো ব্যবস্থা নেই। তাই আপনাকে আগেই অনলাইনে টিকিট কেটে রাখতে হবে। ট্রেনটি ৬ টা স্টেশন পার করে সকাল ১০ টা ১৫ মিনিটে এসে পৌঁছবে দীঘা স্টেশনে।
দীঘা স্টেশন থেকে দীঘার সমুদ্রের দূরত্ব খুব বেশি একটা নয়। আপনি যদি খুব অলস না হন তবে স্টেশনে নেমে কিছু ভোজন সেরে হাঁটতে হাঁটতে চলে যেতে পারেন দীঘার সমুদ্র সৈকতে। যদি তা না করতে চান তবে লাখে লাখে টোটো পেয়ে যাবেন। তবে সাবধান নতুন মানুষ দেখলে সেখানকার টোটো ওয়ালা গুলো কষিয়ে ভাড়া নিয়ে নিতে জানে। তাই দাম দর করে টোটোতে উঠবেন।
চলে তো এলেন দিঘা। এবার থাকবেন কোথায়? দিঘায় সরকারি ও বেসরকারি অনেক ছোটো-বড়ো হোটেল রয়েছে। যার ভাড়া শুরু হয় ৫০০ টাকা থেকে। আরো সস্তায় যদি আপনি ভালো থাকার জায়গা চান তবে আপনি পৌঁছে যান দীঘা যুব আবাসনে। এখানে মাত্র ২০০ টাকায় আপনি থাকতে পারবেন। এই হোটেল থেকে দীঘার দূরত্ব মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিট।
একটি কথা জানিয়ে রাখি আপনি যদি এই হোটেলে থাকতে চান তবে আগে থেকে অনলাইনে এই হোটেল বুক করতে হবে আপনাকে। কিভাবে করবেন তা আমরা পরের লেখাতে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো , এবার চলুন জেনে নিই দীঘার ঘোরার জায়গা কোথায় কোথায় রয়েছে?
সবার প্রথমে আপনি দীঘা ঘুরুন, স্নান করুন, সেখানে সময় কাটান।
আশা করি আপনি দীঘায় অনেকটা সময় কাটিয়েছেন এবার চলুন এক এক করে ঘোরা শুরু করি, ধরে নিলাম আপনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যুব আবাসনে উঠেছেন। এই হোটেলের পাশেই রয়েছে অমরাবতী পার্ক। টিকিট মাত্র ১০ টাকা। আপনি যদি দীঘা যান তবে এই পার্কে অবশ্যই আসুন। এই পার্কের সৌন্দর্য্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই।
পার্ক ঘোড়া শেষ হলে তার দশ মিনিট দূরত্বেই আছে দীঘা বিঞ্জান কেন্দ্র। এই বিঞ্জান কেন্দ্র খোলা থাকে সকাল ৯ টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা পর্যন্ত এবং এর টিকিট মূল্য ২৫ টাকা। কিছুটা সময় এখানে ঘুরে নিতে পারেন।
এর ১৫ মিনিট দূরত্বে রয়েছে দীঘার নতুন স্পট ঢেউ সাগর। এই স্পটটি যেহেতু নতুন তাই এবার গেলে এই জায়গাটি অবশ্যই ঘুরে দেখুন।
এবং আরো দশ মিনিট দূরে রয়েছে দীঘা অ্যাকোরিয়াম। যেখানে সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে। বেশ সুন্দর একটি দর্শনীয় স্থান এখানে কিছুটা সময় কাটান।
এবং মাত্র ১০ মিনিট দূরে রয়েছে নিউ দীঘা। সমস্ত ঘোড়া হয়ে গেলে এই জায়গাটিতে আসুন। এবং ভাটার সময় স্নান করে মজা উপভোগ করুন।
সবশেষে যে স্থানটির কথা বলবো সেটা হলো মোহনা৷ দীঘা থেকে মিনিট ২০ এর হাঁটা পথে আপনারা পৌঁছে যেতে পারেন দীঘার মোহনায়। এটি একটি অসাধারণ স্থান। বিশেষ করে ভোড়ের বেলা এই জায়গাটির সৌন্দর্য অসাধারণ ভাবে প্রকাশ পায়।
দীঘায় খাবার খরচ সাধারনের মধ্যেই থাকে ভাত ডাল ও সব্জির থালি এখানে মাত্র ৫০ টাকায় পাওয়া যায়। এছাড়াও সন্ধ্যায় দীঘায় কোলে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ থেকে শুরু করে কাঁকড়া ভাজা তো রইলোই।